প্রথমপাতা  

সাম্প্রতিক সংবাদ 

 স্বদেশ

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ কমিউনিটি

লাইফ স্টাইল

এক্সক্লুসিভ

বিনোদন

স্বাস্থ্য

বর্তমানের কথামালা

 শিল্প-সাহিত্য

 প্রবাসপঞ্জী 

আর্কাইভ

যোগাযোগ

 

 

 

 

 

জাপানে সরস্বতী পূজা ২০২০ উদযাপিত

 

 


কমিউনিটি রিপোর্ট ।। ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২০ ।।

সরস্বতী জ্ঞান ও বিদ্যার দেবী। মাঘ মাসের শুক্ল পক্ষের পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পূজা হয়ে থাকে। সেই অনুযায়ী ২৯ জানুয়ারি বুধ এবং ৩০ জানুয়ারি ২০২০ বৃহস্পতিবার সরস্বতী পূজা হলেও বাংলাদেশের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ৩০ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার বাগদেবীর আরাধনা করা হয়। কিন্তু প্রবাসে দিনটি কর্মদিবস হওয়ায় জাপানে নিকটবর্তী রোববারকেই বেঁছে নেয়া হয়সাদা রাজহাঁসে চড়ে বীণা হাতে পৃথিবীতে আসা জ্ঞান ও বিদ্যার দেবী সরস্বতী্র আরাধনায়।

জাপানে উৎসবমুখর পরিবেশ এবং নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ রোববার হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজা উদযাপিত হয়েছে। প্রতি বছরের মতো এবারও সার্বজনীন পূজা কমিটি জাপান এই মহোৎসবের আয়োজন করে। এবারের আয়োজনটি ছিল ২৫তম বারের মতো ।

সকাল থেকেই ছোট ছোট ছেলেমেয়ে, তরুণ-তরুণীরা তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে টোকিওর আকাবানে কিতা কুমিন সেন্টার পূজামণ্ডপে জড়ো হতে থাকে। বিভিন্ন রং-বেরঙের পোশাক পরে সব বয়সের নর-নারীরা সরস্বতী দেবীর বন্দনায় হাজির হন পূজামণ্ডপে। অস্থায়ী এই পূজামণ্ডপ ছিল উৎসবমুখর।

কৃপা লাভের আশায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মা বিদ্যাদেবী সরস্বতীর পাদপদ্মে পুষ্পাঞ্জলি দিয়েছে শিক্ষার্থীসহ নানা পেশা ও বয়সের মানুষ। অঞ্জলি, উলুধ্বনি, কাসর, দেবীবন্দনা ও পুরোহিতের ঘণ্টার ধ্বনিতে মুখরিত ছিল পূজামণ্ডপ।

সরস্বতী পূজার নিয়ম অনুযায়ী, প্রথমেই বসাতে হয় পঞ্চমীর ঘট। আল্পনা এঁকে ঘট প্রতিস্থাপন করা হয়। ঘটে থাকে জল ও পঞ্চপল্লব। দেবীর উদ্দেশ্যে নিবেদন করা হয় ফুল, বেলপাতা, ধুপ, প্রদীপ, ফলমূল ও নিরামিষ ভোগ। পূজা শেষ হলে যজ্ঞ করেন পুরোহিত। দেবীর উদ্দেশ্যে পুষ্পাঞ্জলি নিবেদনের মাধ্যমে পূজার কাজ শেষ হয়। শাস্ত্র অনুযায়ী, সরস্বতী পূজা সাধারণ পূজার নিয়মানুসারেই হয়। তবে এই পূজায় কয়েকটি বিশেষ উপাদান রাখতে হয়। অভ্র-আবীর, আমের মুকুল, দোয়াত-কলম ও যবের শীষ এই পূজার গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। পূজা ও দেবীর মালা হিসেবে হলুদ রঙের গাঁদা ফুল লাগে।

হিন্দু শাস্ত্রমতে সরস্বতী পূজায় সকালবেলা দেবীর চরণে অঞ্জলি দেয়ার কথা থাকলে বিভিন্ন আচার শেষে দুপুরে অঞ্জলী প্রদান করে ভক্তরা ।

বিদ্যা ও জ্ঞানের দেবী সরস্বতী পূজা হিন্দু ধর্মালম্বী শিক্ষার্থীদের কাছে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। তাই ,শিশুদের বিদ্যাচর্চার সূচনা হিসেবে ‘হাতেখড়ি’এইদিনেই দিয়ে দেয়া হয়।

এইবছর চারজন শিশু হাতেখড়ি দিয়ে থাকে। এরা হচ্ছে রাধিকা রায় , শ্রিনিধি বিশ্বাস , কিশান বনিক এবং বিবান মণ্ডল।

পূজা শেষে তনুশ্রী গোলদার বিশ্বাসের পরিচালনায় পূজা বিষয় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সার্বজনীন পূজা কমিটি জাপান’র সভাপতি সুনীল রায়, সাধারণ সম্পাদক রতন কুমার বর্মন, উপদেষ্টা সুখেন ব্রহ্ম এবং প্রধান অতিথি দুতাবাসের কাউন্সেলর ( পলিটিক্যাল ) ও দুতালয় প্রধান ডঃ জিয়াউল আবেদিন ।

ধন্যবাদ বক্তব্য রাখেন সার্বজনীন পূজা কমিটি জাপান’র উপদেষ্টা শ্রী কিশোর কুমার বিশ্বাস ।

সরস্বতী পূজার ওপর এক বিশদ আলোচনায় সুখেন ব্রহ্ম বলেন, বাঙালি হিন্দুরা যে সকল দেব-দেবীর উপাসনা বা আরাধনা করে থাকে তার মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য হলেন ‘দেবী সরস্বতী’। কারণ জন্মের পর শৈশবে মা সরস্বতী আমাদের প্রথম দান করেন বাকশক্তি। তারপর ক্রমান্বয়ে আমরা লাভ করি বিদ্যা-বুদ্ধি, জ্ঞান-মান প্রভৃতি বিশেষ গুণাবলি বা শক্তি।

আলোচনা শেষে শিশুদের অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ববিতা পোদ্দার। একঝাঁক ক্ষুদে শিশুর নৃত্য ছাড়াও অন্য শিশুরা গান ও আবৃত্তি এবং ধর্মীয় শ্লোক পরিবেশন করে। ভক্তিমূলক গান পরিবেশন করেন উত্তরণ বাংলাদেশ কালচারাল গ্রুপের সদস্যবৃন্দ।

সবশেষে সন্ধ্যা আরতী, নাচ ও ফল-মিষ্টি বিতরণের পর যথারীতি বেদনাবিধুর মনে প্রতীকী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী উৎসবের শেষ হয়।
 

 


WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action. 

[প্রথমপাতা]