প্রথমপাতা  |  প্রকাশের তারিখঃ বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৩ |

 

জাপানি হোয়িকোয়েন-এ হালাল খাবার দিয়ে ব্যতিক্রমধর্মী বারবিকিউ এবং একজন কিয়োএ সুহাকো

 

 

রাহমান মনি ।।

জাপানে ইসলামের জয় জয়কার দিন দিন বেড়েই চলেছে। সাথে সাথে জনপ্রিয় হচ্ছে হালাল খাবার ।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে জাপানিরাও এগিয়ে আসছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে । অবশ্যই তা প্রবাসী বাংলাদেশীদের অনুপ্রেরণা এবং পরিশ্রমের ফল বলা যায় ‘ আজ তেমনই একজন জাপানী মহীয়সী নারীর অবদানের কথা জানাবো । নাম তার কিয়োএ সুহাকো।

‘লাইফ স্কুল কিরিগাওকা’ টোকিওর কিতা সিটিতে অবস্থিত কিন্ডার গার্ডেন পরিচালনা গ্রুপ “সুবোমি কাই” পরিচালিত একটি কিন্ডার গার্ডেন, যা জাপানিজ নার্সারি ।

সমাজকল্যাণ কর্পোরেশন সুবোমি-কাই, মোট ১১ টি লাইসেন্সপ্রাপ্ত নার্সারি স্কুল, চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট সাপোর্ট সেন্টার এবং স্কুল-পরবর্তী দিনের পরিষেবা পরিচালনা করে থাকে।

সুবোমি কাই প্রধানত টোকিওতে অবস্থিত হ’লেও চিবা, কানাগাওয়া, ইবারাকি এবং আইচি (নাগোয়া)তেও সংস্থাটির কার্যক্রম পরচালনা করে থাকে।

লাইফ স্কুল কিরিগাওকা তে জাপানি ছাড়াও আমেরিকা , কানাডা , চীন , ফিলিপাইনস , বাংলাদেশ , ভারত পাকিস্তান সহ মোট ১১টি দেশের শিক্ষার্থী রয়েছে যা মোট শিক্ষার্থীর ২২% । বিদেশী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫৫% আবার বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত। অর্থাৎ বাংলাদেশীরা দ্বিতীয় সংখ্যা গরিষ্ঠ ।

মোট শিক্ষার্থীর ৬% মুসলিম বা ইসলাম ধর্ম্যালম্বী ।

প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক কিয়োএ সুহাকো সুত্রে জানা যায়, লাইফ স্কুল কিরিগাওকাতে, ২0% এরও বেশি শিশু বিদেশী নাগরিক এবং তাদের অর্ধেকেরও বেশি মুসলিম।

তিনি আরো বলেন, দুর্ভাগ্যবশত, জাপানের বর্তমান পরিস্থিতি হ’লো ইসলাম ও হালালের বোঝাপড়া ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েনি।

কিয়োএ সুহাকো বলেন, প্রত্যেক শিক্ষার্থীদেরকে লালন পালনের আমাদের কর্পোরেট দর্শনের ভিত্তিতে, আমরা প্রত্যেক শিশুকে এক একজন ব্যক্তি হিসেবে সম্মান করি।

তাই , প্রতিটি শিশুর নিজ ধর্মীয় অনুভূতি এবং চর্চার প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। সেই বিবেচনা থেকে এখানে ‘স্কুল ফিডিং’-এ মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য হালাল খাবার সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এতে করে অভিভাবকদের কাছে থেকে ব্যপক সাড়া পেয়ে থাকি । বিশেষ করে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকেন ।

তাছাড়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সমন্নয়ে হালাল খাদ্য সংস্কৃতি পরিচিতি এবং প্রসারে বিভিন্ন আয়োজন করা হয়ে থাকে ।

তারই ধারাবাহিকতায় ২৪ সেপ্টেম্বর রোববার ছিল মুসলিমদের সাথে অন্যান্য ধর্মীয়দের ‘হালাল খাদ্যে এক সাথে বারবিউকিউ আয়োজন’। যার মুল ভুমিকায় ছিল বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগন । বিশেষ করে নাইম আহসান , ফজলুল হক পাভেল , আব্দুল জলিল এবং কাশেম আলতাফ এর অবদান অনস্বীকার্য ।

কিয়োএ সুহাকো আরও বলেন , ‘আমার জীবনের বেশ একটা সময় আমি সিংগাপুরে কাটিয়েছি। আমি সেখানে মুসলিম কমিউনিটির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গিয়েছিলাম । মুসলিম সংস্কৃতি আমি কাছ থেকে দেখেছি , ভালভাবেই জানি । এছাড়াও যেহেতু প্রবাসে ছিলাম তাই , প্রবাসীদের বিভিন্ন বিড়ম্বনা , ধর্ম পালনে বিভিন্ন বাধার শিকার আমি ভালই উপলব্দী করতে পারি ।

তাই , আমি নিজ সামর্থ্য থেকেই মুসলিম কমিউনিটির সাথে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে জাপানে প্রতিটি মুসলিম শিশুর অধিকার নিশ্চিতকরণে কাজ করতে চাই । হয়তো আমার এই প্রচেষ্টা খুবই সামান্য , সমুদ্রে এক ফোটা শিশির দান করার মতো , তবু শুরুটা তো করতে পারছি । এটাও বা কম কিসে! এভাবেই বিন্দু বিন্দু’র সমন্বয়ে সিন্ধুর সৃষ্টি হলে হতেও পারে । আমাদের কোম্পানির যে ১১ টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে এই ১১টিতে স্কুল ফিডিং এ হালাল খাবার সিস্টেম চালু করার জন্য কাজ শুরু করেছি । চেস্টা করছি বাস্তবায়নে ।

কিয়োএ সুহাকো আরো বলেন, আমাদের সম্প্রদায় বিনিময় কার্যক্রমের অংশ হিসাবে, আমরা প্রতি মাসের চতুর্থ রবিবার জাপানি ভাষা সহায়তা এবং আইনি পরামর্শ প্রদান করে থাকি ।

উল্লেখ্য কিয়োএ সুহাকো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শিক্ষার্থীদের বাংলা নববর্ষ শুভেচ্ছা কার্ড , ঈদ শুভেচ্ছা এবং অন্যান্য সকলের জন্য নিজ নিজ সংস্কৃতির বিশেষ দিবস গুলিতে শুভেচ্ছা জানিয়ে থাকেন।

 

 

WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action.

 

[প্রথমপাতা]