প্রথমপাতা  |  প্রকাশের তারিখঃ Friday, June 13, 2025 23:29 |

 

ইউনুসের লন্ডন সফরঃ আসল উদ্দেশ্য আইসিসি'র মামলা এড়ানো(?)

 

 

কমিউনিটি রিপোর্ট ।।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের জাপান সফরের আসল উদ্দেশ্য কি ছিলো তা নিয়ে নানান প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। সরকারীভাবে রাজা চার্লসের হারমোনি এওয়ার্ড গ্রহণের কথা বলা হলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন বলেই প্রতীয়মান হয়ে উঠেছে।

ছবিতে ড. ইউনুসকে কিং চার্লসের হাত থেকে কোনো এওয়ার্ড নেননি বরং তাকে জনৈক নারীর হাত থেকে একটি এওয়ার্ড তাকে তুলে নিতে দেখা যাচ্ছে।

তার লন্ডন সফরের অন্যতম একটি উদ্দেশ্য ছিলো বিএনপি'র ভাইস-চেয়ারপার্সন তারেক রহমানের সাথে সাক্ষাৎ করা যা অনেকটাই স্পষ্ট। কিন্তু বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে তার আসল উদ্দেশ্য ছিলো একেবারেই ভিন্ন।

ইউনুসের লন্ডন সফরের প্রধানতম কারণ ছিলো বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার সাথে সাক্ষাৎ করা এবং এওয়ার্ড নেওয়ার বিষয়টি অনেকটাই অযুহাত হিসেবে মনে করা হচ্ছে।

বৃটেনের ডটি স্ট্রিট চেম্বারস গত মার্চে একটি ঘোষণা দিয়েছিলো যে ড. ইউনুস গত বছরের ৮ আগষ্ট ক্ষমতাগ্রহণের পর থেকে যত রাজনৈতিক নেতাকর্মী হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন, সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে, বিনা বিচারে হাজার হাজার মানুষকে যে গ্রপ্তার করা হয়েছে সে সব অপরাধগুলিকে আমলে নিয়ে তারা আন্তর্জাতিক অপরাধী আদালতে (আইসিসি) ড.ইউনুসের বিরুদ্ধে আর্টিকেল ১৫ অনুসারে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং তখন তারা এ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের কথা ঘোষণা করে।

এ বছরের ২৪ মার্চ স্টিফেন পাওয়েলস কেসি এই মামলার কথা ঘোষণা করেন। তিনি সে সময়ে এক বিবৃতিতে বলেন, "কেউই আইনের উর্ধ্বে নয়, যখন কোনো ভিকটিম তার দেশের ভিতরে বিচার পায়না আইসিসি'র দায়িত্ব হলো এদের বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত করা এবং এর বিচার করা।"

এ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী শামীম মোল্লা হত্যাকান্ডের বিষয়টি উঠে আস। শামীম মোল্লার ছোট ভাই শাহীন আলমের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয় শামীম মোল্লাকে অপহরণ ও নির্মম ভাবে হত্যা করে ড.ইউনুসের অনুসারীরা। আলম বলেন "আমার ভাইকে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়।

সম্প্রতিক মাসগুলিতে বাংলাদেশ চুড়ান্ত ভাবে আইনহীন অরাজকতার রাজ্যে প্রবেশ করেছে। কুখ্যাত পরিচিত সন্ত্রাসীদেরকে কারামুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং মৌলবাদীদের সংগঠনের সদস্যদেরকে ক্ষমতার বিভিন্ন স্থানে বসানো হয়েছে। আমি আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।"

এই ঘটনার সূত্রপাত ধরেই তাদের তদন্ত শুরু হয়। প্রাথমিক তদন্তে বলা হয়েছিলো ইউনুস ৮ আগষ্ট ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে কোনো রকম উষ্কানি ছাড়াই সাংবাদিক, পুলিশ কর্মকর্তা, সংখ্যালঘু এবং আওয়ামী লীগের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের উপর সহিংস হামলা করা হয়েছে। অন্যান্য অভিযোগের মধ্যে রয়েছে-১। হত্যাকান্ড ২। মিথ্যা মামলা দিয়ে মানুষকে জেলে পাঠানো এবং ৩। অনেক সাংবাদিকদের মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে সরকার মব সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণের কোনো চেষ্টাই করেনি। পাশাপাশি ধর্মীয় সহিংসতাকেও উস্কানি দেওয়া হয়েছে। উদাহরন হিসেবে হিন্দুদের উপর হামলা, মন্দিরে হামলার কথা বলা হয়েছে। এসব ঘটনার সাথে জড়িতদেরকে গ্রেপ্তারে কোনো পদক্ষেপই নেয়নি সরকার।

বিবৃতিতে বলা হয়, আর্টিকেল ১৫ অনুসারে ভিকটিমদের সম্পর্কে তথ্য প্রমাণ সংগ্রহের জন্যে তারা কাজ করছেন। এসব ধারাবাহিক এবং সংঘবদ্ধ হামলা সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে পরিকল্পনা করা হয়েছে। মামলাটি দায়ের করা হবে আর্টিকেল ৭ অনুসারে হত্যা, বিনা বিচারে জেলে আটক এবং বাক স্বাধীনতা হরণ নিয়ে।

সম্প্রতি বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের ইংল্যান্ড সফর বেড়ে গিয়েছিলো। ধারণা করা হচ্ছে ডটি স্ট্রিট চেম্বারসকে ম্যানেজ করতেই তাদের এই সর সফরগুলি ছিলো। কিন্তু কোনোভাবেই ডটি স্ট্রিট চেম্বারস ম্যানেজ না হওয়াতে শেষ পর্যন্ত ড. ইউনুস নিজেই বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার এর সাথে সাক্ষাতের সিদ্ধান্ত নেন। কেয়ার স্টারমার ডটি স্ট্রিট চেম্বারসের একজন সদস্য। হলিউডের বিখ্যাত অভিনেতা জর্জ ক্লুনির স্ত্রী আমাল ক্লুনিও এই চেম্বারের সদস্য।

সাধারণভাবে একজন নোবেল বিজয়ী সহজেই বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের সুযোগ পান। ড.ইউনুসও সে রকমটাই হয়তো ধারণা করেছিলেন।

তবে শেষ পর্যন্ত বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ড.ইউনুসের সাথে সাক্ষাত করতে অস্বীকৃতি জানান। ধারণা করা হচ্ছে এর পেছনে অন্যান্য কারণগুলির মধ্যে রয়েছে আন সান সু কি'র নোবেল প্রাপ্তির পর মায়ানমারের পরিস্থিতির জন্যে ইউরোপের দেশগুলিকে যেমন ক্ষমা চাইতে হয়েছিলো, তেমনি নিজ দেশে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত ড.ইউনুসের সাথে সাক্ষাৎ করে তিনি বিপদে পড়তে চাইছিলেন না।

অন্যান্যদের সাথে একটি লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ড.ইউনুস রাজা চার্লসের সাথে হাত মেলানোর একটি সুযোগ পেয়েছিলেন কিন্তু সে সময় সেখানে অন্য কোনও আলোচনার কোনো প্রশ্নই ছিলো না এবং রাজপরিবার থেকেও এ নিয়ে কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি।

পাচারকৃত টাকা উদ্ধারের যে কথা পুরোটাই অসত্য বলে প্রতীয়মান। ইউনুসের মূল লক্ষ্য ছিলো যদি কেয়ার স্টারমারের সাথে দেনদরবার করে তার চেম্বার ডটি স্ট্রিটকে মামলা করা থেকে ফেরানো যায়।

ডটি স্ট্রিটকে এই মামলায় উদ্যোগী করে তুলতে আওয়ামী লীগের একটি অংশের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলেই অনুমান করা হচ্ছে। বৃটেনের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাথে বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই গাঢ় সখ্যতা রয়েছে।
 

 

 

WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action.

 

[প্রথমপাতা]