[প্রথমপাতা]

 

 

 

সেরা আবিষ্কারঃ চিকিৎসাবিজ্ঞানের ১৩

  

 

ডা. স্বপন কুমার মন্ডল

 

অ্যামেরিকান টেলিভিশন নেটওয়ার্ক ‘ডিসকভারি কমিউনিকেশনস’র বিজ্ঞান বিষয়ক একটি চ্যানেল হল ‘সায়েন্স’। এই চ্যানেল বিজ্ঞানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ১০০টি আবিষ্কারের একটা তথ্যভাণ্ডার তৈরি করেছে৷ যে সব উদ্ভাবন আমাদেরকে সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে সহায়তা করছে তার মধ্যে চ্যানেল ‘সায়েন্স’ ১৩ টিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের সেরা আবিষ্কার হিসাবে প্রকাশ করেন।

অ্যানাটমী বা দেহ ব্যবচ্ছেদ বিদ্যাঃ চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রথমে এসেছে অ্যানাটমির জনক আন্দ্রেয়াস ভেসিলাস এর নাম। তিনি ১৫৩৮ সালে প্রথমবারের মতো মরদেহ কেটে ভিতরে কোন জিনিস কী অবস্থায় আছে সেটা জানার চেষ্টা করেছিলেন৷ তিনিই প্রথম বলেছেন, সঠিকভাবে সার্জারি করার জন্য দেহের অ্যানাটমি জানা প্রয়োজন৷

রক্ত পরিসন্চালনঃ এরপর এসেছে রক্ত সঞ্চালনের বিষয়টি৷ উইলিয়াম হার্ভেই প্রথম বলেন, মানুষের হৃদপিণ্ড সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালন করে থাকে৷ অ্যানাটমি আবিষ্কারের প্রায় ৯০ বছর পর উইলিয়াম হার্ভে এ বিষয়টি আবিষ্কার করেন।

রক্তের গ্রুপঃ ১৯০২ সালে অস্ট্রিয়ার দুই জীববিজ্ঞানী প্রথম প্রকাশ করেন, রক্তের বিভিন্ন গ্রুপ আছে ৷ তাদের কারণে ব্লাড ট্রান্সফিউশনের বিষয়টি এখন অনেক নিরাপদ৷

অ্যানেস্থেশিয়া ও অ্যানেস্থেটিক্সঃ ১৮৪২ থেকে ১৮৪৬ এই চার বছরের মধ্যেই অনেক বিজ্ঞানী বের করেন যে, দেহে কিছু কিছু কেমিক্যাল বা অ্যানেস্থেটিক্স ব্যবহারের কারণে রোগীকে অ্যানেস্থেশিয়া করে ব্যথা দেয়া ছাড়াই সার্জারি করা সম্ভব৷

এক্স-রেঃ জার্মান বিজ্ঞানী ভিল্মহেল্ম রোয়্যান্টগেন ১৮৯৫ সালে এক্স-রে আবিষ্কার করেন৷ এর ফলে চিকিৎসাবিজ্ঞান সাথে সাথেছে উপকৃত হয়েছে পদার্থবিদ্যাও৷ ফলে পদার্থবিজ্ঞানের উপর প্রথম নোবেল পুরস্কারটি পেয়েছেন রোয়্যান্টগেন ( আমরা বলি রন্জন)।

ব্যাকটেরিয়াঃ ১৮শ’ শতকের দিকে যখন কলেরা, অ্যানথ্রাক্স এসব রোগের উৎস খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না, তখন লুই পাস্তুর আবিষ্কার করেন যে, কিছু কিছু মাইক্রোবের কারণে এসব রোগ হয়ে থাকে৷ এসব মাইক্রোব বা জীবাণুর নাম তিনি দেন ব্যাকটেরিয়া৷ তাকে বলা হয় ব্যাকটেরিওলজির জনক৷

ভিটামিনঃ পুষ্টিকর খাবারের অভাবেও রোগ হতে পারে৷ ১৯ শতকের প্রথম দিকে এই তত্ত্ব প্রকাশ করেন ফ্রেডেরিক হপকিন্স৷ পরবর্তীতে খাবারের এই সব উপাদানের নাম দেয়া হয় ভিটামিন৷

পেনিসিলিনঃ আলেকজাণ্ডার ফ্লেমিং এটি আবিষ্কার করেন৷ পরে হাওয়ার্ড ফ্লোরে এবং বরিস চেইন পেনিসিলিন নিয়ে আরও ব্যাপক গবেষণা করেন৷ গবেষণায় তারা দেখতে পান, ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত ইঁদুরকে পেনিসিলিন দিয়ে সারিয়ে তোলা যাচ্ছে৷

সালফা ড্রাগসঃ ১৯৩০ এর দশকে গেরহার্ড ডোমাক’ আবিষ্কার করেন ‘সালফা ড্রাগস’ যা ব্যাকটিরাজনিত রোগ নিরাময়ে কাজ করে৷

ভ্যাকসিনঃ ১৭৮৮ সালে ব্রিটেনের বিভিন্ন গ্রামে মহামারি আকারে গুটিবসন্ত ছড়িয়ে পড়লে সেটা থেকে কীভাবে মুক্তি পাওয়া যায় তা নিয়ে গবেষণা শুরু করেন ইংরেজ চিকিৎসক এডওয়ার্ড জেনার । এর ফলশ্রুতিতেই তিনি ১৭৯৬ সালে ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে সমর্থ হন৷

ইনসুলিনঃডায়াবেটিস রোগীদের জীবন অনেকটা সহজ করে দিয়েছে ইনসুলিন৷ রক্তে সুগার বা চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করে এই হরমোন৷ ১৯২০ এর দশকে ইনসুলিনের আগমনের আগে ডায়াবেটিস রোগ মানেই মনে করা হতো ধীরে ধীরে রোগীর নিশ্চিত মৃত্যু৷

অনকোজিনঃ হ্যারল্ড ভার্মুস এবং মাইকেল বিশপ ১৯৭৫ সালে অনকোজিনের সন্ধান দেন৷ এটা এমন এক জিন, যা ক্যান্সারের কারণ হতে পারে৷

এইডস রোগঃ সবশেষে এসেছে এইডস রোগের কারণ এইচআইভি ভাইরাসের আবিষ্কার৷ একে অপরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী দুই বিজ্ঞানী রবার্ট গেলো এবং লুক মন্টাজনিয়ের ১৯৮০’র দশকে এই ভাইরাসের সন্ধান দিয়েছিলেন৷

 

 

ARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action. 

[প্রথমপাতা]

 

 

 

 

লেখকের আগের লেখাঃ