[প্রথমপাতা]

 

 

 

টোকিওতে দুই প্রজন্মের মিলন মেলা

New Page 2

  

 

কমিউনিটি রিপোর্ট ।। এপ্রিল ২৯, ২০১৩ ।।

প্রবাসে জন্মানো বাঙালী শিশুদেরকে দেশীয় সংস্কৃতির সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে রোববার ২৯ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৩টায় টোকিওর তানিনোগাওয়া কাইকানে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রবাস প্রজন্ম আয়োজিত ৫ম দুই প্রজন্মের মিলন মেলা।

এবারের প্রবাস প্রজন্মের অন্যতম আকর্ষণ ছিলো বাংলাদেশ থেকে আসা দেশ বরেণ্য চিত্রশিল্পী মুস্তফা মনোয়ার এবং জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী সুবির নন্দী।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশ রানা প্লাজা ধসে শত শত মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।

আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন- মুনসী কে আজাদ, মাসুদ বিন মোমেন, মুস্তফা মনোয়ার, সুবির নন্দী, সোমাইয়া মিনোরু এবং জাপান পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের সদস্য তাৎসুনোরি ইবাইয়াশি। এ সময় অতিথিদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে অভিভাবকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এন ডি এস ইসলাম নান্নু। এরপর বাংলাদেশ থেকে অতিথিদের হাতে বিশেষ ক্রেস্ট তুলে দেয়া হয়। শিল্পী সুবির নন্দীর হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন মুনসী কে আজাদ এবং মুস্তফা মনোয়ারের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।

এরপর অতিথিরা অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। কন্ঠশিল্পী সুবির নন্দী প্রবাস প্রজন্মকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন আজকের ক্রেস্ট তার জীবনের একটি মাইল ফলক হয়ে থাকবে। অতীতে পাওয়া বিভিন্ন পুরস্কারের চাইতে এটির স্বাদ সম্পূর্ণ আলাদা।

চিত্রশিল্পী মুস্তফা মনোয়ার বলেন, জাপান থেকে সবচেয়ে শেখার বিষয়টি হলো শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা। জাপানিদের ফুল -সেই ফুলের প্রতি তাদের যে যত্ন তা আমাকে অবাক করে। প্রবাস প্রজন্মের আঁকা বিভিন্ন ছবি সম্পর্কে মুস্তফা মনোয়ার বলেন, আমি ছবিতে দেখলাম তারা সেখানে বিভিন্ন ধর্মের উপাসনালয়ের ছবি এঁকেছে -এই মানবিক বোধটিই গুরুত্বপূর্ণ।

পিতা গোলাম মুস্তফার লেখা "আমরা নতুন, আমরা কুঁড়ি নিখিল মানব নন্দনে...." গানটির কথা উল্লেখ করে মুস্তফা মনোয়ার বলেন, আমার মনে হয় এখানে একটু ভুল আছে। তা হলো "ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুদের অন্তরে...." লাইনটির বদলে হওয়া উচিত ছিলো "ঘুমিয়ে আছে শিশুর মাতা সব শিশুদের অন্তরে...." -কারণ আসলে তো শিশুরা মায়ের কাছ থেকেই সংস্কৃতির শিক্ষা নেয়।

প্রধান অতিথি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেন, দূতাবাস প্রতি মাসে অন্ততঃ ১ বার ৫ থেকে ১২ বছরের শিশুদেরকে নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজনের কথা বিশেষ ভাবে বিবেচনা করছে। তিনি বলেন প্রবাস প্রজন্মের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি এই বার্তা সকলের কাছে পৌঁছে দিতে চান। তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মুনসী কে আজাদ, তাৎসুনোরি ইবায়াশি এবং সোমাইয়া মিনোরু।

দ্বিতীয় পর্বে অনুষ্ঠিত হয় শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠান। মাতৃভূমি থেকে বহুদূরে বেড়ে ওঠা এসব শিশুদের অনবদ্য পরিবেশনা সকলকে মুগ্ধ করে। তারা নাচ, গান, কবিতা, অভিনয় সহ বিভিন্ন পরিবেশনায় তারা উপস্থিত দর্শকদেরকে মাতিয়ে রাখেন। দর্শকরাও তাদেরকে নানা ভাবে উৎসাহিত করেন।

তৃতীয় পর্বে বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী সুবির নন্দী তার কালজয়ী গান গেয়ে শোনান। কবি শামসুর রাহমানের একটি দেশাত্ববোধক গান দিয়ে শুরু করে একে একে বিভিন্ন গান তিনি পরিবেশন করেন। এর মধ্যে অনেক গান তিনি দর্শকদের অনুরোধে গেয়ে শোনান। হাজার মনের কাছে, এতো সুর আর এতো গান, দিন যায় কথা থাকে... সহ অনেক জনপ্রিয় গান তিনি উপহার দেন।

প্রবাস প্রজন্ম অনুষ্ঠানের সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন জুয়েল আহসান কামরুল, রাহমান মাহিনুর আইকো (ইফা) এবং নিয়াজ আহমেদ জুয়েল।

কয়েক শ' প্রবাসী প্রায় ৫ ঘন্টা ব্যাপী অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন।

 

WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action.

[প্রথমপাতা]