প্রথমপাতা  

সাম্প্রতিক সংবাদ 

 স্বদেশ

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ কমিউনিটি

লাইফ স্টাইল

এক্সক্লুসিভ

বিনোদন

স্বাস্থ্য

বর্তমানের কথামালা

 শিল্প-সাহিত্য

 প্রবাসপঞ্জী 

আর্কাইভ

যোগাযোগ

 

 

 

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

 

 

রাহমান মনি                                          

 

 

এক মুরাদ থেকে রাজনীতিবিদদের শিক্ষণীয় অনেক

 

 

 

কথায় বলে, “প্রত্যেক ভালো’র-ই একটা মন্দ দিক আছে এবং প্রত্যেক মন্দের-ই একটা ভালো দিক রয়েছে”।
সমসাময়িক বাংলাদেশে সর্ব মহলে নিন্দিত এবং গণধিকৃত , আলোচিত সমালোচিত নাম হচ্ছে ডাঃ মুরাদ। একজন চিকিৎসক , একজন রাজনীতিবিদ , একজন পিতা , একজন স্বামী বা এই জাতীয় যে কোন বিশেষণেই বিশোষিত করা হউক না কেন সর্ব মহল থেকেই গণধিকৃত । এমনকি এতোদিন যারা তার এসব কুকর্মের সহযোগী এবং তার নিয়োগদাতা পর্যন্ত তাকে ব্যবহার করে ব্যবহার করা কনডমের মতো ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন ।
ডাঃ মুরাদের চরিত্র ,ব্যক্তিজীবন নিয়ে বলা বা লিখার রুচী আমার নেই । কারন , তার অশ্রাব্য খিস্তি খেউর যতোটা না আউরানো যায়, পাঠকদের জন্য ততোই মঙ্গলজনক ।
নিন্দিত ডাঃ মুরাদ তার কৃতকর্মের শাস্তি যা পাবার তা পেয়েছে , পেতে চলেছে এবং পাবে এই ধরায় এবং মৃত্যুর পর শেষ বিচারের দিনে ।
ডাঃ মুরাদ তো যা পাবার তা পাবেই । কিন্তু , মুরাদ কর্মকাণ্ড থেকে আমাদের রাজনীতিবিদরা কি শিক্ষা নিচ্ছেন বা আদৌ নিবেন কি না !
রাজনীতিবিদদের শিক্ষা নেয়ার অনেক শিক্ষা থেকে দুই একটি বিষয়ে উল্লেখ করা যেতে পারে ।
১ , ঔদ্ধত্বতা আল্লাহ্‌ পছন্দ করেন না এবং সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী একমাত্র আল্লাহ্‌ ।
ঔদ্ধত্ব, অহংকার কোন পর্যায়ে পৌঁছলে ধর্ম , নারীসমাজ, সন্মানিত ব্যক্তিবর্গ সম্পর্কে এই ভাষায় কথা বলা যায় ! ভেবে দেখার জন্য কি এতোদিন কেউ ছিল না ? নাকি ইচ্ছাকৃতভাবেই তাকে দিয়ে এ জাতীয় আচরণ করিয়েছেন দলের হাইকমান্ড । উত্তর খুঁজছে বাংলা জনগণ ।
কিন্তু আল্লাহ্‌’র কোন কিছু খুজতে হয় না । কারন, কোন কিছুই তার অজান্তে ঘটে না। তিনি ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না।
এতোদিন যে মুরাদ আঙ্গুল উচিয়ে বড় গলায় বলতেন “এই মুরাদ মাথা উচু করেই চলবে , কথা বলে যাবে । কারন, বঙ্গবন্ধু আমার পিতা এবং হাসিনা আমার মাতা। আমি যা করি , যা বলি তার সবই আমার মা হাসিনা জানেন এবং তারই নির্দেশে”।
সেই মুরাদ এখন মাথা নিচু তো করেছেই, তার উপর আত্মগোপনে। তারপর জনরোষ থেকে গা বাচাতে বিদেশে পাড়ি । কোথায় গেলো তার সেই উচু মাথা ? কোথায় পালালো তার আত্ম অহংকার ? মাথা নিচু করেই তো বিদেশ পাড়ি জমাতে হ’লো ।
রাজনীতিবিদদের শিক্ষা হচ্ছে , ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয় । তাই ক্ষমতা পেলে ধরা কে সরা জ্ঞান ভাবতে নেই। ক্ষমতার দাপট নয় , মানুষের হৃদয় জয় করতে হয় ।
২ , দলে নিজের অবস্থান জোরদার করার জন্য অন্য দল থেকে লোক এনে কিংবা নিজ স্বার্থ উদ্ধারের জন্য যারা দলে ভিড়ে তারা কোনদিনই দলের কল্যান বয়ে আনতে পারে না। এরা না ঘরকা, না ঘাটকা কিসিমের হয়ে থাকে। তারা জানে দলের কর্মীরা কোনদিনই এদের মন থেকে গ্রহন করতে পারেনা । যেমন আজও আমরা বিহারীদের গ্রহন করতে পারিনি। কিংবা , ভারত থেকে আসাদেরকে আমরা ‘ঘটি’ বলে সম্বোধন করে থাকি। তেমনি যারা দল বদল করে তারা দলের ভিতর অপাংকেয় হয়ে থাকে। তাই নিজেদের জাহির করার জন্য অনেকটাই আবোলতাবোল বকে থাকেন। একনিষ্ঠ প্রমান দিতে গিয়ে কি যে করে/বলে তা সে নিজেও বুঝে না/জানে না। ডাঃ মুরাদ তার বড় প্রমান।
ডাঃ মুরাদ একসময় ছাত্রদল করতেন। ময়মনসিংহ মেডিকেল ছাত্রদল-এর প্রচার সম্পাদক ডাঃ মুরাদ ক্ষমতার পালাবদলে ভোল পাল্টিয়ে একপর্যায়ে ছাত্রলীগ এর সভাপতি বনে যান । ছাত্রদল কে প্রতিহত করতে মুরাদ ছিল লাঠিয়াল । মুরাদ তার যোগ্যতার প্রমানও রেখেছে । পুরষ্কার হিসেবে সভাপতির পদ।
তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার পারদর্শিতায় খুশী হয়ে পুরস্কার সরূপ ছাত্র রাজনীতি থেকে জাতীয় রাজনীতির অংশ হয়ে একপর্যায়ে দেশের অর্ধেক মন্ত্রীর পদ দেয়া হয় তাকে। যা তার যোগ্যতার চেয়ে বড্ড বেশী ভারী হয়ে যায়। আর এই ভার সহ্য করতে না পারার কারনে কি বলতে গিয়ে কি বলে ফেলে তা সে নিজেই জানেনা। আর লাগামহীন অতি কথন-এর পরিনতি যে কি হতে পারে তার প্রমান ডাঃ মুরাদ। অন্যকে পচাতে গিয়ে তিনি নিজেই পচে গলে দুর্গন্ধ ছড়িয়েছেন ।
৩ , ডাঃ মুরাদ আত্ম গোপনে থাকা কিংবা বিদেশে পাড়ি জমানো, যা-ই করেন না কেন তার পরিবারকে কিন্তু বাকী জীবন এই ক্ষত বয়ে বেড়াতে হবে ।
ইতিহাসের আস্তাকুড়ে চলে যাবে পরিবারটি সুনাম । মানুষ আঙ্গুল তুলে দেখাবে ‘ওইযে মুরাদ’-------। অথচ তার পিতার একটি ক্লিন ইমেজ রয়েছে এলাকায় ।
এতোদিন যে পরিবারটিকে ঘিরে কোলাহল মুখরিত ছিল , সরকারী সুযোগ সুবিধায় প্রোটোকল নিয়ে চলাফেরা করতো , সেই পরিবারটিতে হটাত সুনসান নীরবতা ,ঘৃণার চোখে মানুষের তাকানো , নিকটাত্মীয়দের সাথে দূরত্ব তৈরি , সব মিলিয়ে বিতিকিচ্ছিরি একটা ক্ষত বয়ে বেড়াতে হবে পরিবারটিকে । ব্যাঙ্গাত্বক গল্প তৈরি হবে ।
যে মুরাদ সংবিধান থেকে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ বাদ দেয়ার হুমকী দিয়ে সংসদে বিল আনাতে চেয়েছিলেন ক্ষমতার জোরে, আল্লাহ্‌ তায়ালার অসীম ক্ষমতা এবং ইশারায় মুরাদই সেই সংসদে যাওয়ার যোগ্যতা হারিয়ে আজ আত্মগোপনে !
রাজনীতিবিদদের জন্য আরেকটি শিক্ষা হ’লো অন্যকে ছোট করে নিজে বড় হওয়া যায় না । সন্মানী ব্যক্তির সন্মান হানীর হীন চেষ্টা থেকে বিরত থাকতে হবে । আল্লাহ্‌ তা বরদাশত করেন না। আল্লাহ্‌র বিচার ধীরে ধীরে হলেও নির্ভুল এবং যথাযুক্ত।
আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা ক্ষমতায় গেলে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে যায় অনেকটা নিজ থেকেই । যাদের কল্যানে তিনি নেতা হলেন, ক্ষমতায় গিয়ে তাদের কথা বেমালুম ভুলে যান। সাধারন জনগনের ধরা ছোঁয়ার বাহিরে থাকেন। ক্ষমতাটাকে তারা চিরস্থায়ী মনে করেন । তাই, যে সিঁড়ি বেয়ে তারা উপরে ওঠেন সেই সিঁড়ি সরিয়ে ফেলেন। সিঁড়ি বেয়ে যে আবার নিচে নামতে হতে পারে সে কথা বেমালুম ভুলে যান। আর এই ভুলে যাওয়াটাই এক সময় তাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায় । ক্ষমতা থেকে ছিটকে গেলে তখন আর কাউকে পাশে পান না ।
তাই , ডাঃ মুরাদের ঘটনা মন্দের ভাল হিসেবে রাজনীতিবিদদের অনেক শিক্ষনীয় থেকে কিছুটাও যদি গ্রহন করতে পারেন তাহলে তারা নিজেরাই উপকৃত হবেন।।
 


rahmanmoni@gmail.com

 

 

ARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action. 

[প্রথমপাতা]

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আরও দেখুন.....

.

আরও দেখুন.....