[প্রথমপাতা]

 

 

 

খেজুরের কাঁচা রস বিক্রি নিষিদ্ধ

  

 

ডা. স্বপন কুমার মন্ডল

 

 

বিশেষজ্ঞরা জানান, জীবাণুবাহী বাদুড় খেজুরের রসের হাঁড়িতে মুখ দিলে, রস পান করলে লালার সঙ্গে জীবাণু মিশে যায়। সেই কাঁচা খেজুর রস পান করার ৭ থেকে ৮ দিনের মধ্যে এ রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। মৃত্যুহার অনুযায়ী এটা অন্যান্য সংক্রামক ব্যাধির তুলনায় বেশি ভয়াবহ কারণ নিপাহ হলে রক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে ক্ষীণ। প্রতিষেধক না থাকায় নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার বৃদ্বির ঝুঁকি রয়েছে। সাধারণত নওগাঁসহ উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের এলাকায় নিপা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের আইইডিসিআর-এর তথ্যমতে, ২০০১ সালে প্রথম আক্রমণ শনাক্তের পর থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত দেশের ২১টি জেলায় নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত ১৭৬ জনের মধ্যে ১৩৬ জনই প্রাণ হারিয়েছেন। ২০১১-১২ সালে লালমনিরহাটে আক্রান্ত ২২ জনের মধ্যে সবার মৃত্যু হয়েছিল। ২০০৪ সালে ফরিদপুরে আক্রান্ত ৩৫ জনের মধ্যে ২৭ জন মারা যান। শনাক্তের পর প্রথম তিন বছর দেশে এটি অজানা রোগ হিসেবে পরিচিত ছিল। ২০০৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল-সিডিসি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার পর রোগটি নিপাহ হিসেবে শনাক্ত হয়। গত ২০১২ সালে ঢাকা, রাজবাড়ী, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, কুষ্টিয়া, নওগাঁ, নাটোর, দিনাজপুর, গাইবান্ধা এবং ঠাকুরগাঁয়ে নিপাহ রোগী পাওয়া যায়।

আইইডিসিআর-এর পরিচালক প্রফেসর ড. মাহমুদুর রহমান জানান, জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে বাংলাদেশে নিপাহে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে বেশি। প্রতিষ্ঠানের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোস্তাক হোসেন বলেন, এ ভাইরাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় নষ্ট হয়। তাই সংগৃহীত রস জ্বাল দিয়ে পান করা হলে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে না।

আর তাই প্রাণঘাতী নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সাধারণ মানুষের কাছে ‌‌‌খেজুরের কাঁচা রস বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ‘নিপাহমুক্ত প্রতিটি গ্রাম’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জেলার সিভিল সার্জনদের মাধ্যমে এ বিষয়ে সতর্ক বার্তা দেশের সর্বত্র পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, নির্দেশনা অমান্যকারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে, তবে এটা কোন আনুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা বা আইন নয়। এ প্রসঙ্গে অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ বলেন, যেহেতু কাঁচা রস থেকেই নিপাহ ভাইরাস ছড়ায় তাই সাধারণ মানুষের কাছে যাতে কেউ পানের জন্য রস বিক্রি করতে না পারেন তাই এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এরপরও যদি কেউ আক্রান্ত হন তাহলে গাছের মালিক ও রস বিক্রেতাদের দায়ী করা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 

 

ARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action. 

[প্রথমপাতা]

 

 

 

 

লেখকের আগের লেখাঃ