[প্রথমপাতা]

 

 

 

 

 

ইতিহাস নিয়ে বালখিল্যতা দুঃখজনক

 

 

 

মোঃ মহিউদ্দিন মজুমদার মাসুম

ইতিহাস বড়ই নির্মম, ইতিহাস কাউকে কমবেশী স্বীকৃতি দেয় না । ইতিহাসে সবার স্থান তার কর্মের দ্বারা নির্দিষ্ট । কেউ যদি ইতিহাস রচনায় স্বার্থপরতা ও স্বেচ্ছাছারীতার আশ্রয় নেন, তা কখনো স্থায়ী হয় না, সাময়িক ভাবে এই বিভ্রান্তিকর ইতিহাসটাই সঠিক বলে বিবেচিত হয় । কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় ইতিহাসবিদরা গবেষনার মাধ্যমে ইতিহাসের ভ্রান্তি দূর করে সঠিক ইতিহাস জাতির সামনে হাজির করান । বর্তমানে আমরা যে ইতিহাসকে সঠিক বলে জানছি মানছি, ভবিষ্যতে তা যুক্তিতর্ক ও প্রাসঙ্গিকতার বিচারে ভুল প্রমানিত হতেই পারে । সমস্যা হচ্ছে, যার বিপক্ষে যায়, সে মানতে চায় না । কিন্তু এক পর্যায়ে সবাইকে তা মেনে নিতেই হয় ।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে সর্বজনগ্রাহ্য ক্ষেত্র খুবই কম, খুব কম বিষয় আছে যা আমরা সবাই স্বীকার করি । এই বিভ্রান্তিকে আমি খুব বেশী অযৌক্তিক মনে করি না । কারন আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাসের নায়ক খলনায়কদের অনেকে এখনও জীবিত আছেন । হয়তঃ ভাবছেন ইতিহাস সৃষ্টির নায়করা যেহেতু জীবিত আছেন, উনাদের মুখে শুনা ইতিহাসইতো সঠিক হবার কথা । ইতিহাস শাস্র কিন্তু তা বলে না । ইতিহাস সৃষ্টির সাথে জড়িতরা তাদের জীবিত অবস্থায় তার সর্বশেষ অবস্থানের অনুকূলে ইতিহাস বর্ণনা করেন । এই ক্ষেত্রে ব্যারিষ্টার মওদূদ আহমেদ আমাদের সামনে জীবন্ত উদাহরন, উনি আওয়ামীলীগ বিএনপি জাতীয় পার্টি হয়ে সর্বশেষ বিএনপিতে আছেন, যখন যেই দলে সেই দলের অনুকূলেই ইতিহাস বলার চেষ্টা করেছেন । অন্যদিকে, আমরা আওয়ামী রাজনীতিরত মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন মায়ার কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস শুনতে চাইলে এক ধরনের ইতিহাস শুনব আবার বিএনপির রাজনীতিরত মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার কাছে আরেক ধরনের ইতিহাস শুনব, উনারা নিজ দলীয় স্বার্থের উর্ধ্বে উঠতে পারবেন না, এটাই স্বাভাবিক । আবার উনারা যখন বলবেন উনাদের চ্যালেঞ্জ করাও কষ্টকর, কারন উনারা ঐ ঐতিহাসিক অধ্যায়টি সৃষ্টির সাথে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত, উনাদের মুখ নিঃসৃত কথা সাধারন জনগন সত্য বলেই মনে করবেন । আবার এটাও ঠিক, একই ঘটনার সত্য একটাই হয়, দুই রকম নয় । কিন্তু আমরা দুই বা ততোধিক আপাত সত্য নিয়েই মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস চর্চা করছি । ইতিহাসবিদদের মতে, কোন জাতি-রাষ্ট্রের সঠিক ইতিহাস ইতিহাসবিদরা গবেষনার মাধ্যমে তুলে আনতে সক্ষম হন ঐ ইতিহাস জন্মদাতাদের মৃত্যুর ৫০/১০০ বছর পর । কারন ইতিহাসের জন্মদাতারা জীবিত থাকা অবস্থায় স্ব-স্ব অবস্থানের আলোকে ইতিহাসকে তুলে ধরেন আর গবেষকরা ঐ ইতিহাস জন্মদাতাদের মৃত্যুর পর বিভিন্ন প্রেক্ষিতকে বিবেচনায় রেখে ঘটনাক্রমকে মূল্যায়ন করে ইতিহাসের সত্যতা তুলে আনেন ।
রাজনীতিকরা ইতিহাসের জন্ম দিবেন আর ইতিহাসবিদরা সেই ইতিহাস গবেষনার মাধ্যমে সঠিক ভাবে তুলে আনবেন । কিন্তু আমাদের সাম্প্রতিক সময়ের একজন রাজনীতিক ইতিহাসের জন্ম না দিয়ে ইতিহাসবিদের ভূমিকা পালন করতে গিয়ে দেশের সর্বত্র আলোচনার ঝড় তুলেছেন । আমি নিশ্চিত, আপনি সঠিক ভাবেই ধরতে পেরেছেন, আমি তারেক জিয়ার সাম্প্রতিক ইতিহাস চর্চা অর্থাৎ ইতিহাসের ছোঁড়া ডিনামাইডের ভূমিকা লিখতেই আপনার অনেকটা মূল্যবান সময় নষ্ট করেছি, দুঃখিত ।
যাহোক, বিএনপির ভবিষ্যত কর্ণধার তারেক জিয়া ওয়ান এ্যালিভেন সরকারের নির্মম বাস্তবতার শিকার হয়ে লন্ডনে চিকিৎসা নিতে যান । চিকিৎসার প্রয়োজনে এখনও থাকতে হচ্ছে এমনটা নয়, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে নিজের অনুকূলে নয় বিধায় এখনও ফিরে আসেননি । কথা হচ্ছে-তারেক জিয়া ইতিহাস চর্চার নামে যে ডিনামাইডটি ছুঁড়েছেন তার কেন্দ্রবিন্দু বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের পাহাড়সম ব্যাক্তিত্ব জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রশ্ন ওঠেছে- এক) তারেক জিয়ার ছোঁড়া ডিনামাইড বঙ্গবন্ধুর অবস্থানকে টলাতে পারবে কী ? দুই) নতুন রাজনৈতিক বিতর্ক উত্থাপনের জন্য বর্তমান সময়টা কতটা প্রাসঙ্গিক ? তিন) এই বিতর্ক থেকে তারেক জিয়া তথা বিএনপি লাভবান হওয়ার সুযোগ আছে কী ? আমি নিশ্চিত প্রশ্নগুলির উত্তর সন্মানিত পাঠকরা আমার চাইতে ভালো জানেন । আমার জিজ্ঞাস্য অন্য জায়গায়- এই তরুণ নেতার দায়িত্ব ইতিহাসের জন্ম না দেয়া নাকী প্রতিষ্ঠিত ইতিহাসকে নিয়ে বিতর্ক তৈরী করা । তাছাড়া উনি কী এই কাজটি স্বপ্রণোদিত হয়ে করেছেন নাকী অন্য কেউ প্রলুব্ধ করেছে আর এতে লাভটা কার ।
সর্বজনবিদিত সত্য হচ্ছে তৃতীয় বিশ্বের ক্ষমতাশীনরা সর্বদা জনগনের দৃষ্টিকে সমসাময়িক সমস্যা থেকে সরাতে অতীতাশ্রয়ী বক্তব্য, ভীন্ন ভীন্ন চমক ও নতুন নতুন বিতর্ক তৈরী করে জনগনকে সমসাময়িক সমস্যা কেন্দ্রিক আলোচনা থেকে দূরে রাখেন আর আমাদের দেশের প্রাচীন দল আওয়ামীলীগ এই ক্ষেত্রে শতভাগ পারদর্শী । দেখে মনে হচ্ছে তারেক জিয়া ইচ্ছাকৃত ভাবে ক্ষমতাশীন আওয়ামীলীগের পক্ষে একটি মওকা তুলে দিয়েছেন, আর আওয়ামীলীগও এনিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন । সরকারের বিতর্কিত ৫ জানুয়ারীর নির্বাচন, উপজেলা নির্বাচন ও জনজীবনের সমস্যা কেন্দ্রিক আলোচনা ঢাকা পড়ে গেছে । নিশ্চিত ভাবে বলা যায় তারেক জিয়ার ইতিহাস চর্চায় বিএনপি বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে, সরকার উপরে-উপরে যাই বলুক প্রকৃত পক্ষে স্বাচ্ছন্দ্যকর ইস্যুর সুবিধা নিচ্ছেন আর জনগন এসব দেখে বিরক্ত হচ্ছেন ।
জনগন বিরক্ত হওয়ার অনেক কারনের মধ্যে অন্যতম কারন হচ্ছে তারেক জিয়া একটি প্রতিষ্ঠিত সত্য ইতিহাসকে যেসব যুক্তির আলোকে ভুল প্রমানের চেষ্টা করেছেন । তা যুক্তিতর্কের বিবেচনায় খুবই নিন্মস্তরের, বিভ্রান্তিকর ও সত্যের অপলাপে ভরা । সামান্য আলোকপাত না করলে আমার সমালোচনাটি অযৌক্তিক একপেশে মনে হবে ।
যাহোক, তারেক জিয়া প্রথমে ২৫ মার্চ ২০১৪ ইং তারিখে লন্ডনে দলীয় কর্মীদের সামনে বললেন- বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি এবং স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান । এই কথাটিকে প্রতিষ্ঠিত করতে তারেক জিয়া কিছু তথ্য উপাত্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন, ঐ সব যুক্তিতর্ককে সংক্ষেপ করলে যা বুঝা যায় তা হচ্ছে-মেজর জিয়া কালুর ঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্ব-হস্তে লিখিত ঘোষনাপত্রে নিজেকে প্রভিন্সের হেড অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট উল্লেখ করে ঘোষনাটি দেন এবং মুজিব নগর সরকার যেহেতু ১৭ এপ্রিল শপথ নেন, তাই শহীদ জিয়া ১৭ এপ্রিলের পূর্ব পর্যন্ত প্রথম বৈধ প্রেসিডেন্ট এবং ঘোষক । আরো বললেন আওয়ামীলীগ নাকী ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষনকে স্বাধীনতার ঘোষনা বলেন । তারেক জিয়া ৭ মার্চ ভাষন পরবর্তী সময় থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু এবং আওয়ামীলীগের বক্তব্য-বিবৃতি ও কর্মসূচীকে সামনে এনে প্রমান করালেন ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষনকে স্বাধীনতার ঘোষনা দাবী করা তথ্যগত ভাবে ঠিক নয় । আর তারেক জিয়া ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু এ্যারেষ্ট হওয়ার পূর্বে পাঠানো স্বাধীনতা ঘোষনার ওয়ারলেস ম্যাসেজকে বিশ্বাসে আনেননি ।
তারেক জিয়ার বক্তব্যটি ইউটিউবের কল্যানে কমবেশী অনেকে শুনেছেন এবং হয়তঃ শুনবেন । এইটা নিশ্চিত করে বলা যায় তারেক জিয়ার উপস্থাপনার ঢং এবং শব্দ চয়ন থেকে আগামী প্রজন্মের রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যে পজেটিভ ম্যান্টালিটি বিকাশে সহায়তা না করে বিরোধপূর্ণ রাজনীতিকে উৎসাহিত করবে । তারেক জিয়ার বক্তব্যটি বিচার বিবেচনা ছাড়া স্ট্রেইটলি শুনলে খুব বেশী ভুল বলে মনে হবে না । তবে একটু অতিরিক্ত সরলীকরন ও সাদামাটা টাইপের । উনার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে অনেক প্রশ্নের উদ্রেক করবে, আমরা জানি, ৩রা নভেম্বর ছাত্র নেতারা স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেছেন, জাতীয় সংগীত গেয়েছেন এবং স্বাধীনতার ঘোষনাপত্র পাঠ করেছেন । কালুর ঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে মেজর জিয়ার পূর্বে চট্রগ্রাম আওয়ামীলীগ নেতা হান্নান সাহেবও স্বাধীনতার ঘোষনা পত্র পাঠ করেছেন । কেউ যদি ঐ ছাত্রনেতাদের ও হান্নান সাহেবকে ঘোষক বলেন, তা কতটা যৌক্তিক হবে ? রাষ্ট্রের জন্মে ঐ ঘোষনাগুলির ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনস্বীকার্য্য, তবে ইতিহাসবিদরা এই ঘোষনা গুলির ঐতিহাসিক গুরুত্বকে স্বীকৃতি দিলেও বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন । ছাত্রনেতারা ছাত্রদের প্রতিনিধি, হান্নান সাহেব একজন স্থানীয় নেতা এবং মেজর জিয়া একজন সামরিক অফিসার, উনারা কেউ জাতির বৈধ প্রতিনিধি নয় । একমাত্র আওয়ামীলীগ ৭০ এর নির্বাচনের মাধ্যমে জাতির প্রতিনিধিত্ব করার বৈধ স্বীকৃতি অর্জন করেছিল । তাই আমরা ছাত্র নেতাদের, হান্নান সাহেব ও মেজর জিয়াকে স্বাধীনতা ঘোষনার বৈধ দাবীদার বলতে পারি না । তাছাড়া তারেক জিয়ার কাছে জানতে চাই, মেজর জিয়া ২৭ তারিখ ঘোষনা দিলেন অথচ স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চ কেন ? তারেক জিয়া স্বীকার করুক না করুক, ইতিহাস বলে বঙ্গবন্ধু যেহেতু ২৫ তারিখ রাত ১২ টার পর অর্থাৎ ২৬ তারিখ ওয়ারলেস ম্যাসেজে স্বাধীনতার বার্তাটি দেন, সেহেতু আমাদের স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চ ।
তারেক জিয়া উনার আলোচনার বেশীর ভাগ জুড়ে প্রমানের চেষ্টা করেছেন আওয়ামীলীগ ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষনকে স্বাধীনতার ঘোষনা দাবী করে, যা যৌক্তিক নয় । আওয়ামীলীগ ৭ মার্চের ভাষনকে স্বাধীনতার ঘোষনা দাবী করে, এই কথাটি ঐভাবে কখনও শুনেনি । জানিনা, তারেক জিয়া এইটাকে ব্যাসিস করে কেন এই নাতিদীর্ঘ আলোচনাটি করলেন । তবে এইটা জানি, আওয়ামীলীগ সহ রাজনীতি বিশ্লেষকদের অনেকে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষনকে স্বাধীনতার ইঙ্গিত বলে মনে করেন । এমনকী শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানও সাপ্তাহিক বিচিত্রায় উনার এক প্রবন্ধে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষনকে স্বাধীনতার সুষ্পষ্ট ইঙ্গিত বলেছেন, যা বাঙ্গালীদের স্বাধীনতার প্রস্তুতি গ্রহনে উদ্দীপ্ত করেছিল । অন্যদিকে, মেজর জিয়া ২৭ মার্চ স্বহস্তে লিখিত ঘোষনায় নিজেকে প্রভিন্সের হেড অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট উল্লেখ করে ঘোষনা দিলেও চার/পাঁচ ঘন্টার ব্যবধানে সংশোধন করে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে আবার স্বাধীনতার ঘোষনাটি দিলেন, ঐ রেকর্ডকৃত ঘোষনাটি পরবর্তীতে অনেকবার প্রচার করা হয় । প্রথম ঘোষনাটির বৈধতাজনক অসাড়তার কারনে দ্রুত সংশোধন করে দ্বিতীয় ঘোষনাটি দেন । শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান জীবদ্দশায় কখনো নিজেকে ঘোষক এবং প্রথম প্রেসিডেন্ট বলে দাবী করেননি, অথচ বিএনপি ৯১তে ক্ষমতাশীন হয়ে স্বাধীনতার দলিল-দস্তাবেজে পরিবর্তন আনেন অর্থাৎ শহীদ জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে উল্লেখ করেন ।
প্রশ্ন আসতে পারে, কেউ যদি হুট করে নিজেকে প্রেসিডেন্ট বলে ঘোষনা করেন, তিনি কী প্রেসিডেন্ট হয়ে যান ? তা হয় না, একমাত্র জনগনের স্বীকৃত প্রতিনিধিরা তা গঠনের বৈধতা পায় । কারন তারা জাতির স্বীকৃত প্রতিনিধি । খেয়াল করুন, মুজিবনগর সরকার যুদ্ধ পরিচালনায় কর্ণেল ওসমানীর নেতৃত্বে ১১টি সেক্টর গঠন করে যুদ্ধ পরিচালনা করেছে । আর মেজর জিয়া ঐ ১১ টি সেক্টরের মধ্যে ১টির নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাও মুজিবনগর সরকারের অনুমোদনক্রমে । মেজর জিয়া প্রেসিডেন্ট হলে এতোটা নীচে নেমে কর্ণেল ওসমানীর অধীনস্ত হয়ে ১টি সেক্টরের কমান্ডার হলেন কেন এবং স্বাধীন বাংলাদেশে প্রেসিডেন্ট সাহেব সামরিক বাহিনীর দ্বিতীয় প্রধানের চাকুরীইবা করতে গেলেন কেন ? যাহোক, এতোটা জটিল না করে আরো হালকা ভাবে বলি, ধরুন বঙ্গবন্ধু বা প্রেসিডেন্ট জিয়া হত্যার পরপর কেউ একজন স্বপ্রণোদিত হয়ে ঘোষনা দিলেন- আমি বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট, তখন আমরা কী বলবো ঐ স্বঘোষিত ব্যাক্তিটি দেশের প্রেসিডেন্ট হয়ে গেছেন ? এভাবে প্রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ থাকলে দেখা যেত যে কেউ রেডিও বা টিভি স্টেশন দখল করে নিজেকে প্রেসিডেন্ট বানিয়ে ফেলতেন । দরকার কী ভোটাভোটি শপথ-টপথের ঝামেলা করা । আর বর্তমানে অসংখ্য বেসরকারী টিভি রেডিওর বদৌলতে প্রেসিডেন্ট হওয়াটা অনেক সহজ হতো ।
বিষয়টা পরিস্কার করার জন্য আন্তর্জাতিক আদালতের একটি মামলার কথাও বলতে পারি, কসোভোর স্বাধীনতার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সার্বিয়া আন্তর্জাতিক আদালতের স্মরনাপন্ন হন । অনেক যুক্তিতর্কের পর আদালত সিদ্ধান্ত দেন কসোভোর নির্বাচিত প্রতিনিধিরা যেহেতু স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়ে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে স্বাধীন করেছেন, তাই কসোভোর স্বাধীনতা বৈধ । এখানে বৈধতার স্বীকৃতি হচ্ছে কসোভোর জনগনের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা যেহেতু সিদ্ধান্তটি নিয়েছেন । ( চলবে)

 

 

WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action. 

 

[প্রথমপাতা]

 

 

 

লেখকের আগের লেখাঃ