ফ্রিক ওয়েভঃ সমুদ্রের দৈত্যাকার ঢেউ
কমিউনিটি রিপোর্ট ।।
বহু প্রাচীন কাল থেকেই সমুদ্রের নাবিকদের মধ্যে একটি কথা
প্রচলিত আছে -সপ্তাহে অন্ততঃ একটি জাহাজ হারিয়ে যায় গভীর সমুদ্রের দানবীয়
বিশাল ঢেউ এর আঘাতে। বর্তমানকালের নাবিকরাও পর্যন্ত দাবী করেন অতর্কিত
২৫/৩০ মিটার উঁচু ঢেউ মোকাবিলা করার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা। বিজ্ঞ জনেরা শুনে
হাসেন। সমুদ্রের ঢেউ সর্বচ্চ কত উঁচু হতে পারে তার একটি হিসেব আছে। লিনিয়ার
মডেল অনুযায়ী সমুদ্রের ঢেউ সর্বচ্চ ১০ থেকে ১২ মিটার পর্যন্ত ফুলে উঠতে পারে
এর বেশী কিছুতেই নয়। অভিজ্ঞ নাবিকদের কেউ পাত্তাই দিতে চাননা। তাদের ধারনা
এসব জেলে আর মাঝিদের গালগপ্প।
বিজ্ঞানীরা বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন এভাবে, একটি ক্লাসের শিশুদের একটি গড়
উচ্চতা আছে। কোন কোন শিশু এই গড় উচ্চতার কম হবে আবার কেউ কেউ এই উচ্চতার
বেশী হবে। কিন্তু এরকম কখনও হবেনা যে কোন একটি শিশু গড় উচ্চতার ৩/৪ গুন বেশী
লম্বা হবে। বৈজ্ঞানিকদের তত্ব মতে এরকম অস্বাভিক উঁচু ঢেউ প্রতি দশ হাজার
বছরে একবার হতে পারে বড়োজোড়।
লিনিয়ার মডেল সারা বিশ্বে এতটাই গ্রহনযোগ্য যে বিশ্ব জুড়ে শিপিং
ইন্ডাষ্ট্রিগুলো এই তত্বের উপর ভিত্তি করেই টিকে আছে। অর্থাৎ, ১০/১৫ মিটার
উঁচু ঢেউয়ের তোড়ে টিকে থাকবে এমন করেই সমুদ্রগামী জাহাজগুলোকে তৈরি করা হয়।
ঢেউয়ের আঘাতে জাহাজ ভেঙে যাবার কারন হিসেবে বলা হলো মরচে ধরা জাহাজ আর
নাবিকদের অদক্ষতা।
কিন্তু
১৯৯৫ সালে নর্থ সীর একটি অয়েল প্ল্যাটফরমের ঘটনায় সচকিত হয়ে ওঠেন বিজ্ঞানীরা।
ঐদিন নর্থ সীতে ফেনিয়ে উঠছিল সামুদ্রিক ঝড়। অয়েল প্ল্যাটফরমটি সমুদ্রপৃষ্ঠ
থেকে ৩০ মিটারের মত উঁচুতে অবস্থিত। ঝড়ের সময় হঠাৎ দেখা গেল একটি বিশাল ঢেউ
উঠে আসছে সমুদ্র থেকে। অয়েল প্ল্যাটফরমটিকে বিশাল ঢেউটি স্পর্শ করে গেল।
বিজ্ঞানীদের ভাষায় যার সম্ভাবনা নাকি দশ হাজার বছরে একবার।
এবার নড়েচড়ে বসলেন বিজ্ঞানীরা। হেরিওট-ওয়াট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর
জুলিয়ান উলফ্রাম চার বছর ধরে গবেষনা করে দেখলেন প্রচলিত লিনিয়ার মডেলের
তত্বের বাইরে গিয়ে বেশ কয়েকটি বিশাল আকারের ঢেউ ঐ অঞ্চল দিয়ে বয়ে গেছে।
পরবর্তীতে, ইয়োরোপিয়ান রিমোট সেনসিং স্যাটেলাইটে মাত্র এক সপ্তাহে ১০টি ২৬
থেকে ৩০ মিটার উচ্চতার ঢেউ ধরা পড়ে।
পূর্বের ধারনা অনুযায়ী এ ধরনের ঢেউ হওয়া একেবারেই অসম্ভব। কিন্তু বাস্তবে
সেটাই ঘটছে। এরপর পর্যটকবাহী দুটি জাহাজ দক্ষিন মেরু থেকে ফেরার পথে এই
অস্বাভাবিক ঢেউ বা ফ্রিক ওয়েভের মুখে পতিত হয়। জাহাজ দুটি কোন মতে রক্ষা
পেলেও বিশ্বের শিপিং ইন্ডাষ্ট্রিগুলো আর চুপচাপ বসে থাকতে চায় না তারা এর
সঠিক ব্যাখ্যা চায়।
অবশেষে ইউনিভারসিটি অব টুরিন এর প্রফেসর অল অসবোর্ন আবিস্কার করেন কোন কারনে
সমুদ্রের ঢেউয়ের স্বাভাবিক স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়ে যায়। দেখা যায় যে দু'পাশের
দু'টি ঢেউয়ের উচ্চতা হঠাৎ কমে গিয়ে তৃতীয় একটি ঢেউয়ে সেই শক্তি সঞ্চারিত হয়।
ফলে ঐ ঢেউটির উচ্চতা অস্বাভাবিক বেড়ে গিয়ে তৈরি হয় ফ্রিক ওয়েভ।
তবে মজার বিষয় হলো ঢেউয়ের অস্বাভাবিক উচ্চতা জাহাজগুলোর দুর্ঘটনায় পতিত
হবার মূল কারন নয়। আসল কারন হলো ফ্রিক ওয়েভ ভেঙে যায়। অর্থাৎ, সমুদ্র তীরে
যেমন ঢেউ গুলি আছড়ে পড়ে ফ্রিক ওয়েভ মাঝ সমুদ্রে ঠিক ওই ভাবে আছড়ে পড়ে। এরকম
বিশাল উচ্চতার বিপুল জলরাশি যখন কোন কিছুর উপর আছড়ে পড়ে -তখন তার পক্ষে টিকে
থাকা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। জাহাজগুলো ফুলে-ফেঁপে ওঠা ঢেউয়ের সাথে লড়তে পারে
কিন্তু তিন চার গুন ফুলে ওঠা ঢেউ যখন আছড়ে পড়ে তাকে সামাল দেবার মত করে
জাহাজগুলোকে এখনও তৈরি করা হয়্না।
অসবোর্ন তার তত্বের নাম দেন নন-লিনিয়ার মডেল। এখন সামুদ্রিক ঢেউয়ের দুটি
প্যাটার্ণ তৈরি হলো, লিনিয়ার ও নন লিনিয়ার মডেল। দেখা গেল, সমুদ্রের
নাবিকেরা যুগ যুগ ধরে সঠিক কথাই বলে এসেছেন। এগুলো কোন রূপকথা নয়। বরং
বিশ্ব শিপিং ইন্ডাষ্ট্রির জন্য একটি রূঢ় সত্য। রূপকথার মত সব গল্পই রূপকথা
নয় -অসবোর্নের গবেষনা সেটাই প্রমান করল।
>>২০৫০ সাল নাগাদ এশিয়ার বেশিরভাগ নদীর
পানিপ্রবাহ কমে যাবে
>>সিঙ্গাপুরে প্রত্যেকের জন্য ইলেকট্রনিক
মেইলবক্স
>>মিশরে ৩,৬০০ বছর আগের একটি শহরের সন্ধান
লাভ
>>আগুনের সঙ্গে বসবাস
>>বিজ্ঞানের অসহায়ত্ব ভুপাল দুর্ঘটনা
>>কুমিরের সাগর পাড়ি দেবার রহস্য
>>ছাইমেঘ থেকে বিমান বাঁচানোর নতুন উপায়
>>ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস
>>নানা মারাত্মক রোগের কারণ প্রক্রিয়াজাত
মাংস
>>মাদাগাস্কারের ছোট্ট ডুবুরি পাখি হারিয়ে
গেল
>>হাবলের চোখে, গ্রহ খাদক
নক্ষত্র
>>বিমান বিধ্বস্তের কাহিনী
>>ইন্দোনেশিয়ার জঙ্গলে নতুন প্রজাতির জীব
আবিষ্কার
>>ছাইমেঘের জন্য বিজ্ঞানীরা প্রস্তুত
>>জোয়ান অব আর্ক
>>এশিয়ায় হুমকির মুখে পরিযায়ী পাখির দল
>>নেয়ানডার্থালরা আধুনিক মানুষের
পূর্বপুরুষ
>>ডেঙ্গু প্রতিরোধে জিনগত কারণ অনুসন্ধান
>>মেক্সিকো উপসাগরে ‘এক্সোন ভালডেজ’ ঘটতে
আর কতো দেরী?
>>বোর্নিওতে নতুন প্রানের সন্ধান
>>প্রথমবারের মত পুরো মুখমন্ডলের
অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন
>>আইসল্যান্ডে আরো বড় অগ্নুৎপাতের সম্ভাবনা
বাড়ছে
>>আইসল্যান্ডেই এই, ইয়েলোস্টোন ফাটলে কি
হবে?
>>আগ্নেয়গিরির ছাইয়ে প্রভাবিত বিমান,
আবহাওয়া, সূর্যাস্ত
>>বাংলা বছরের সূচনা
>>বিশ লাখ বছরের পুরনো কঙ্কাল থেকে
বিবর্তন ধারার সন্ধান
>>শুকিয়ে যাচ্ছে আরল সাগর
>>জেব্রাফিশঃ হৃদযন্ত্রের টিস্যু নিজেই
সারিয়ে তোলে
>>হাতি -ফোর হুইল ড্রাইভ
>>গ্রহাণুর ওপর নজর রাখবে নতুন
‘কমপ্যাক্ট’ স্যাটেলাইট
>>প্রবালেরা মারা যাচ্ছেঃ
বিভিন্ন দেশে নেমে আসতে পারে বিপর্যয়
>>মৌমাছির হুল ফোটানোয় অসুখ সারে!!
>>মায়া সভ্যতা
>>অ্যাকিলিস
>>২০১৪ সালে চালু হচ্ছে গ্যালিলিও
>>"সেটি" প্রকল্পের ৫০ বছর
>>প্রাচীন মানবের পূর্ণাঙ্গ জিন বিশ্লেষণ
>>ধ্বসে যেতে পারে পশ্চিম এন্টার্কটিকা
>>ঝড়ের সংখ্যা কমে বাড়তে পারে গতি
>>শিরাকাওয়া-গো এবং গোকাইয়ামা
>>পৃথিবীর গভীরতম স্থানঃ চ্যালেঞ্জার ডিপ
>>সুপার ভলকেনো
>>চীনে হাজার হাজার ডাইনোসরের পায়ের চিহ্ন
>>শিকোকুর তাকামাত্সুঃ প্রকৃতি,
ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সংমিশ্রন
>>প্যারিস ট্রেন ক্র্যাশঃ কি ছিল তার
পেছন
>>তিমি কাহিনী
>>মাউন্ট সেন্ট হেলেনের অগ্নুৎপাত
>>ছাদ উড়ে যাওয়া বিমানের কাহিনী
>>টর্নেডো
>>জলবায়ু পরিবর্তনে গাছপালা ও প্রাণীকূল
সর্বোচ্চ হুমকির মুখে
>>ভূপাল বিপর্যয়
>>মাছেরা যেদিন ডাঙায় উঠল
>>মহাবিশ্বে অজানা গরম বস্তু!
>>এয়ার ক্র্যাশ ইনভেস্টিগেশনঃ
মাঝ আকাশে দুই বিমানের সংঘর্ঘ
>>তেনেরিফেঃ এভিয়েশন ইতিহাসের
সবচাইতে বড় দুর্ঘটনা
>>সুপার কন্টিনেন্টের ভাঙাগড়া
>>কিং
কোবরা
>>লেক চুজেনজিঃ মনমাতানো একটি লেক
>>রোমানিয়ায়
কমিউনিস্ট বিরোধী বিপ্লবের ২০ বছর
>>ঐতিহাসিক
নগরী কামাকুরা
>>গ্র্যান্ড
ক্যানিয়নের রহস্য
>>একাত্তুরের টুকরো ছবি
>>একাত্তুরের গনহত্যা
>>চ্যানেল স্ক্যাবল্যান্ডস
>>ফ্রিক
ওয়েভঃ সমুদ্রের দৈত্যাকার ঢেউ
>>চীন জাপান যুদ্ধ
>>সাপ্পোরোর ইয়ূকি মাতসুরি
>>যশোর রোড
>>ইয়াইয়ামাঃ অবকাশ যাপনের অদ্বিতীয় স্থান
>>ইয়াকুশিমাঃ জাপানের প্রাচীনতম বৃক্ষরাজির দ্বীপ
>>মাতসুশিমাঃ জাপানের অন্যতন দর্শনীয় স্থান
>>ওসাকা ক্যাসেল
>>বিশ্বের ব্যাস্ততম ষ্টেশন শিঞ্জুকু
[প্রথমপাতা] |