|
||||||||||||||||||
|
বন, কুয়াশা আর শীতের গল্প
শাশ্বত
স্বপন
পদ্মা নদীর কাছে দীর্ঘ
বনঝাউ, কাঁশবনের মাঝে সারি সারি গজারি, বাবলা, বন্য কাঁটা বাঁশ, বেত ঝোপ।
সন্ধ্যায় বাতাসে বন্যপুষ্প ও তৃণগুল্মোর সুগন্ধ, পাখির কিচিরমিচির ডাক,
বনের ডোবার অগভীর জলে ফুটন্ত লিলি ফুল--বাতাসে সুবাস ছড়িয়ে দেয়। শীতকালে
আমাদের অঞ্চলে লিলি ফুল হেমন্ত কালে দেখা যায়। নির্জন আকাশতলে দিগন্তব্যাপী
জোৎস্না রাতে বনপুষ্পের সুবাশ, ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক, শীতের মধ্যে শিয়ালের
পাক্কা হুয়া ডাক--রাত্রির পরিবেশে আমাকে যে কোথায় নিয়ে যায়। নির্ঘুমে আমরা
সবাই। বিড়ি-সিগারেটের ফাঁকে গাছ ও ঘাস কাটার হিসাব শেষ করে বনের শুকনো
ডাল-পাতা জ্বালিয়ে, আগুনের চারিদিকে পাটি, গামছা বিছায়ে বসে শীতের গান আর
সেই সাথে বনমুরগী, বনহাঁস অথবা বনজলের মাছ পুড়াইয়া ভাত অথবা মুড়ি-পিয়াজ-তেল
দিয়ে খাওয়া। আহা! সে কি স্বাদ, কি শান্তি এই ঘন কুয়াশা রাত্রিতে। মনে হয়,
পিকনিক অথবা মাসুদ রানা সিরিজের কোন কাহিনীর নির্জন দ্বীপের ছবি।আগুনের কাছে
থাকলে শান্তি, দূরে গেলেই কনকনে শীত। রাতের শীত বাড়লে অথবা শীতের ভোরে ধনে
পাতার ভর্তা দিয়ে ভাত খাওয়া। শীতের পার্বণের কত স্বাদ নিয়েছি কত সাথীদের
বাড়ী গিয়ে; অন্যের ক্ষেত থেকে পিয়াজ তুলে আনতে গিয়ে ধরাও পড়েছি। গ্রামে
থাকলে মা হয়তো শুঁটকী, মটরশুটি, শীম, আলু, ধনে পাতার ভর্তা দিয়ে চিতের
পিঠায় মেখে দিত। মায়ের কথা মনে হলে শীত যেন, আরো বেড়ে যায়। পূরাণের গঙ্গা (পদ্মা
নদী) দেবী যে, মা-বাবা-ভিটেমাটিসহ সব নিয়ে গেছে, দূরে থাকলে--তা মনে হয় না।
বরং মনে হয়, বাড়ি গেলেই মাকে দেখতে পাব।
ARNING:
Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content
is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to
legal action. |
লেখকের আগের লেখাঃ
|